ইরানি সীমান্ত রক্ষীরা একদল শরণার্থীকে নির্যাতন করার পর নদীতে ফেলে দিয়েছে এই নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছে কয়েকজনের।
©ক্রাইম টিভি বাংলা অনলাইন ডেস্ক ♠
ইরানি সীমান্ত রক্ষীরা আফগানিস্তানের একদল শরণার্থীকে নির্যাতন করার পর নদীতে ফেলে দিয়েছে আর তাতে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
আফগানিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমের ভাষ্য অনুযায়ী, শুক্রবার আফগানিস্তানের হেরাত প্রদেশ থেকে অবৈধভাবে ইরানে প্রবেশের চেষ্টার সময় ওই অভিবাসীরা ধরা পড়ে। তাদের পেটানোর পর নদীতে ঝাঁপ দিতে বাধ্য করে ইরানি সীমান্ত রক্ষীরা।
এতে অভিবাসীদের মধ্যে কয়েকজন মারা যান বলে প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে।
এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ইরান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ঘটনাটি ইরানে নয় আফগানিস্তানের সীমান্তের ভিতরে ঘটেছে আর তাদের নিরাপত্তা রক্ষীরা এ ধরনের কোনো ঘটনায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে।
বিবিসি বলছে, কতোজন এ ঘটনার শিকার হয়েছেন তার সঠিক সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি কিন্তু স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কয়েক ডজন অভিবাসী সীমান্ত অতিক্রম করেছিল এবং তাদের মধ্যে অন্তত সাত জনের মৃত্যু হয়েছে ও আরও অনেক এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
নদী থেকে অভিবাসীদের লাশ উদ্ধারের জন্য একটি তল্লাশি দল পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
আফগানিস্তানের হিউম্যান রাইটস কমিশন (এএইচআরসি) জানায়, স্থানীয় কর্মকর্তারা তাদের বলেছেন, “কাজের খোঁজে ইরানে প্রবেশ করতে চাওয়া একদল আফগান অভিবাসীকে আটক করে ইরানি নিরাপত্তা বাহিনী।
“তাদের হারিরুদ নদী (আফগানিস্তান-ইরানের সীমান্ত নদী) পার হতে বাধ্য করা হয়, এতে অনেক ডুবে যান এবং কিছু লোক বেঁচে যায়।”
শের আগা নামের প্রত্যক্ষদর্শী একজন অভিবাসী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, “ইরানি রক্ষীরা আমাদের হুমকি দিয়ে বলে, আমরা যদি নদীতে ঝাঁপ না দেই তাহলে আমাদের গুলি করা হবে।”
আরেক অভিবাসী শাহ্ ওয়ালি অভিযোগ করে বলেন, “ইরানি রক্ষীরা আমাদের পিটায় তারপর আমাদের কঠিন কাজ করতে বাধ্য করে। এরপর মিনিবাস যোগে নদীর কিনারে নিয়ে যায়, আমরা সেখানে নামার পর তারা আমাদের নদীতে ফেলে দেয়।”
প্রায় ৩০ লাখ আফগান অভিবাসী ইরানে বাস করে। তাদের মধ্যে শরণার্থী ও মজুরি শ্রমিকও আছে। কাজের খোঁজে প্রতিদিন কয়েকশত আফগান সীমান্ত পেরিয়ে ইরানে প্রবেশ করে।
ইরানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের পর বিপুল সংখ্যক অভিবাসী আফগান দেশে ফিরে আসে। এদের অনেকেই করোনাভাইরাস বহন করে আফগানিস্তানে নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হয়।
সম্প্রতি বিধিনিষেধ শিথিলের উদ্যোগ নিয়েছে ইরান। এরপর থেকেই আফগান অভিবাসীরা ফের দেশটিতে প্রবেশ করতে শুরু করেছে।